আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে ভালবাসে

 

আমার নাম সাদিকা। আমি আমার গল্পটা সবাইকে বলতে চাই। এটা মূলত একটা ভালবাসা, ভুল আর আশার গল্প। আমি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। আমি বেশি কথা বলি না। তাই আমার তেমন একটা বন্ধুত্ব হয় না কারো সাথে। আমি খুব রক্ষণাত্মক পরিবারের মেয়ে। তাই আমি তেমন একটা বাইরে যেতাম না। আমারও ইচ্ছে করতে অন্য সবার মত বাইরে ঘোরাঘুরি করতে। কিন্তু বাবা, মা রক্ষণাত্মক হওয়ায় আমার সুযোগ হয়নি কখনো। আমার কলেজ জীবনেও এই কারণে বন্ধুত্ব তো দুরের কথা কারো সাথে কথাই বলতে পারতাম নাম। তবুও আমার ২ জন বন্ধু ছিল। আমার বন্ধুত্বের পরিসীমা এই ২-৩ জনেই সীমাবদ্ধ ছিল। আমার খেলাধুলা, নাচ-গান, ড্রয়িং এসব কিছুর প্রতি প্রবল আকর্ষণ ছিল। কিন্তু আমার বাবা, মা পড়াশুনা ছাড়া আর কিছু করতে দিতে রাজি হতেন না।

একদিন কলেজে আমার ক্লাসের একটা ছেলের সাথে পরিচয় হয়। তার নাম ছিল রায়িদ। তার সাথে ১-২ দিন মিশে বুঝতে পারলাম সে খুব মজার ছেলে। তার কথায় আমার ২ জন বন্ধুর সার্কেল ৩ জনে পরিণত হয়। সে কথা বললে আমি আর বান্ধবি আলিয়া খালি হাসতাম। খুব মজা পেতাম রায়িদের কথায় আমরা। আলিয়া কখনো কলেজে না আসলে বা কোনো কাজে ব্যাস্ত থাকলে রায়িদই আমাকে সময় দিতো, গল্প করতো।

একদিন রায়িদ কথা বলতে বলতে আমাকে বলে বসলো, ‘সাদিকা, তুমি কি জানো তুমি অনেক সুন্দর। আর তোমাকে আমার অনেক ভাল লাগে।' আমি এটা শুনে একটু লজ্জা মাখানো আনন্দই পেলাম। কারণ এর আগে কখনো কারো মুখ থেকে নিজের স্বম্পর্কে এভাবে শোনার সুযোগ হয়নি।

রায়িদের বাবা শিল্পপতি ছিলেন। বড়লোক বাবার একমাত্র ছেলে। আমার পরিবার ছিল মধ্যবিত্ত। তাই আমার স্বপ্ন ছিল পড়াশুনা করে ভাল একটা চাকরী করে বাবা, মায়ের পাশে দাঁড়াবো। আমার স্বপ্নের কথা যখনি রায়িদকে বলতাম, সে মজা করে বলতো কি না জানি না কিন্তু সে বলতো, ‘তুমি এত পড়াশুনাই বা কেন করবা আর চাকরিই বা কেন করবা। আমাকে বিয়ে করে নিলে তো তোমার এসব কিছু করাই লাগবে না।' আমার বয়স তখন ২০ হবে। সুতরাং বয়সের কারণে কি না জানি না, আমি রায়িদের এসব কথায় রায়িদের প্রতি প্রবল দুর্বল হয়ে পড়তে লাগলাম। এটাও সত্যি, আস্তে আস্তে রায়িদই আমাকে আলিয়ার থেকে বেশি সময় দিতে লাগলো। আমার খুব খেয়াল রাখতে লাগলো রায়িদ। তাই সবকিছু মিলায়ে আমি রায়িদের প্রতি দুর্বল হতে লাগলাম। এক পর্যায়ে, সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বসলে আমি তাতে রাজি হয়ে যাই। সে আমার বাড়ি তার বাবা, মাকে দিয়ে প্রস্তাব পাঠায়। আমার বাবা, মা রায়িদ ও তার পরিবার স্বম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে রাজি হয়ে যায় এবং সামাজিকভাবে সুন্দর বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিয়ে সম্পন্ন হয়। বিয়ের ৮ বছরের মাথায় আমাদের ঘর আলো করে একটা মেয়ে আসে। আমি আর রায়িদ ভালবেসে তার নাম রাখি লাবিবা।

আমাদের সংসারে ১ম দিকে সব ভালই চলছিলো। কিন্তু আস্তে আস্তে রায়িদের ব্যবহারে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। সে সবসময়, আমার এটা ভাল লাগে না ওটা ভাল লাগে না বলে খোঁটা দিতে শুরু করে। এমনকি রায়িদ আমার একমাত্র বান্ধবি আলিয়ার সাথে দেখা করা, যোগাযোগ করা বন্ধ করে দেয়। আমার কাজই ছিল দিনরাত আমার মেয়ে লাবিবার সাথে সময় কাটানো। আমার ঘরের বাইরে বেরোনো এক প্রকার বন্ধ হয়ে যায়। রায়িদ আস্তে আস্তে রাত করে বাসায় ফেরা শুরু করে। আমার খুব রায়িদের সাথে সময় কাটাতে ইচ্ছে করতো। কিন্তু সুযোগই হোতো না। কিছু জিজ্ঞেস করলে রায়িদ কোনো উত্তরই দিতো না। বাসায় এসে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়তো। সকালে উঠেই খেয়ে বাবার অফিসে। রায়িদের কারণে আমারও অনার্স কমপ্লিট করা হোলো না। আর ও নিজেও করলো না।

একদিন রাতে ঘরে উত্তেজিত হয়ে আমাকে বলেই বসলো, ‘তুমি স্ত্রী হিসেবে মোটেই ভাল না।' এটা শুনে আমার এতটাই কষ্ট লাগলো যে আমি কেঁদেই ফেললাম। এরপর একদিন তো রায়িদ তো আমার গায়েই হাত তুলে বসলো। আমি বিষয়টা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। আমি সারারাত কেঁদেছিলাম। আমি আমার বাবা, মাকে জানালাম যে আমি ডিভোর্স চাই। কিন্তু তারা সমাজ, সামাজিকতা ও লাবিবার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই হয়তো রাজি হোলো না। আমারও কিছু করার ছিল না। আমিও নিজেকে স্বান্তনা দিতে লাগলাম সব ঠিক হয়ে যাবে ভেবে। আমাদের বিয়ের বয়স যখন ১০ বছর হয়ে গেল। তারপর কিছুটা ভাল হতে লাগলো। এভাবে আমাদের বিয়ের.১২ বছরের মাথায় আমি আবার প্রেগন্যান্ট হোলাম। এবার আমাদের পুত্র সন্তান হোলো। আমরা তার নাম রাখলাম জাবির। সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার হচ্ছে আমি যতদিন হাসপাতালে ছিলাম রায়িদ একটাবারও আমার খোঁজ নেয়নি। এমনকি আমাকে যখন হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হোলো রায়িদ আমার সাথে একটাবারও ভাল করে কথা বলেনি।

এর মধ্যেই রায়িদ আমাকে সবচেয়ে বড় আঘাতটা আমাকে দেয়। সে একদিন আবার উত্তেজিত হয়ে আমাকে বলে বসলো তার নাকি নতুন একটা মেয়ের সাথে স্বম্পর্ক হয়েছে। যে রায়িদকে আমার চেয়েও বেশি ভালবাসে। এটা শোনার পর আমার মনের অবস্থা কেমন হতে পারে এটা নিশ্চয়ই আপনাদেরকে বুঝিয়ে বলতে হবে না। আমার মনে হতে লাগলো তৎক্ষণাৎ আমি রায়িদকে ডিভোর্স দিয়ে লাবিবা আর জাবিরিকে নিয়ে বেরিয়ে যাই। কিন্তু কোথায় যাব, কি করব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। বাবা, মাকে জানালে তারা নিশ্চয়ই আমারই ত্রুটি খুঁজে বের করবে।

এরপর একদিন জাবির ও লাবিবাকে আমার কাছে রেখে ব্যবসার কাজে দেশের বাইরে যায়। বলে রাখা ভাল, এর মধ্যে আমাদের দাম্পত্য জীবনের ১৪ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে এবং আমার বাবাও এর মধ্যে মারা গেছেন। বিদেশ গিয়ে এক মাসের মাথায় রায়িদ কল দিয়ে বললো যে সে বিয়ের পর যে মেয়েটার সাথে স্বম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলো। তাকে সে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলো এবং তারা একসাথে ওখানেই থাকবে। বারবার বলব না এসব শুনে আমার মনের অবস্থা কেমন হতে পারে। আপনারাই বুঝে নেন। আমি এইসব বিষয় কিছুই আমার শ্বশুর, শ্বাশুড়িকে জানালাম না। ধৈর্য ধরে বসে থাকলাম আর আল্লাহকে ডাকতে লাগলাম। হয়তো আল্লাহ আমার ডাকও শুনলো। বিদেশ যাওয়ার ৩ মাসের মাথায় রায়িদ ফোন দিয়ে বললো, ‘তোমাকে ছেড়ে আসা আমার ভুল ছিল। আমাকে তুমি ফিরিয়ে নাও, প্লিজ।' আমি এত কিছু না ভেবেই বললাম, ‘আমি তো তোমার জন্য সবসময়ই ছিলাম। তুমি চলে আসো।' এই কথাটা বলার পরে ঐদিনই আমি প্রথম বুঝতে পারলাম আমি রায়িদকে আসলে কতটা ভালবাসতে পারি যে এতকিছুর পরেও রায়িদকে এটা বলতে পারি।

রায়িদ ফিরে আসার পর আমরা আবার নতুন করে শুরু করলাম। এভাবে আমরা ১৬ বছর কাটিয়ে ফেললাম। আমার বয়স এখন ৩৬। আমাদের দাম্পত্য জীবনেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। রায়িদও তার আচরণেও ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। বলা যায়, কলেজ জীবনে চলে গেছে। আমার খুব খেয়াল রাখে সে। সে নিজেই বলেছে আমাকে বাড়ি থেকে ছোট খাটো একটা বিজনেস করতে। যাতে আমার সময় কাটে। আমি বাড়ি থেকেই কেকের অর্ডার নিই। রায়িদ এখন প্রায়ই আমাকে, লাবিবা ও জাবিরকে নিয়ে ঘুরতে যায়। আমরা সত্যিই আমাদের জীবনটাকে আবার নতুন করে ফিরে পেয়েছি।




এই বইটি কিনতে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন



আপনি কি মতিঝিলে হোটেল খুঁজছেন? তাহলে এই লিংকে ক্লিক করে এই হোটেলটি বুক করতে পারেন।

গল্পটা এমন হলেও পারতো (ব্লগের 'কেন মানুষ প্রতারণা করে'গল্পটা পড়ার পর)


 

যদি এমন হোতো যে, যেদিন থেকে আভা মাহিরকে আর দেখতে চাচ্ছিলাম না। তারপরের দিন থেকে ওর সাথে দেখা না হওয়ায় আভার খুব মন খারাপ হচ্ছে। তারপরেও মস্তিষ্ক বলছে, আভা যা করছে ঠিকই করছি। কিন্তু সবকিছু নিয়ে ভাবার জন্য আভার সময়েরও প্রয়োজন ছিল। আভা তার কলিগ আর হস্পিটালের কাজে বেশি মনোনিবেশ করলো। সবকিছু আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে শুরু করলো।

একদিন বিকেলে আভার ডিউটি শেষ হলো। সে ভাবলো, আজ বাসে না গিয়ে বাসায় হেঁটে হেঁটে যাবে। অন্তত যতদুর যাওয়া যায়। বিকেলটা খুব সুন্দর ছিল। তার এই সুন্দর বিকেলটা কিছুক্ষণের জন্য উপভোগ করার ইচ্ছেও ছিল। কিছুদুর হাটতে হাটতে তার হঠাৎ মনে হোলো কেউ তাকে পিছন থেকে ডাকছে। মনে হলো কন্ঠস্বরটা পরিচিত। তাই আমি পিছন ফিরে দেখি আমার কলেজের এক বন্ধু। তার নাম দারুল। আভার সাথে দারুলের বহুদিন কোনো যোগাযোগ নাই। আভা তাকে দেখে খুব খুশি হয়েই বললো, ‘ও বাবা! এ দেখি দারুল। কেমন আছো তুমি?’ দারুল বললো, ‘কেমন আছি, ভাল আছি পরে হবে আগে চলো কোথাও গিয়ে বসি। কিছু খেতে খেতে দুই বন্ধুর এতদিনের জমানো সব কথা বলা যাবে।' আভাও রাজি হয়ে গেল। ঐদিন তাদের অনেকক্ষণ আড্ডা হোলো। তারা দুইজন দুইজনের ফোন নম্বর দেওয়া নেওয়া করলো। আভা ওর ঠিকানা নিলো, দারুলকেও আভা তার নিজের ঠিকানা দিলো।

এরপর থেকে দারুলের সাথে আভার নিয়মিত যোগাযোগ হতে লাগলো। দারুল, আভার খুব কাছের বন্ধু ছিলো। কলেজ জীবনে দারুল, আভার খুব খেয়াল রাখতো। দারুল, আভাকে খুব ভাল বুঝতো। আভারও কলেজ জীবনে দারুলের সাথে সময় কাটাতে খুব ভালো লাগতো। দারুলের সাথে আভার নতুন করে এই যোগাযোগ আভার মন থেকে মাহিরকে সরিয়ে দিতে শুরু করলো।

এরপর থেকে দারুল আর আভা নিয়মিত দেখা করা আরো বাড়িয়ে দিলো। তাদের একসাথে সময় কাটানোর পরিমানও বাড়তে শুরু করলো। দারুল খুব মজার একটা ছেলে ছিল। সে সবাইকে হাসি খুশি দেখতে বেশি ভালবাসতো। তাই সে এমনভাবে কথা বলতো যে সে কথা বললে কেউ না হেসে পারতো না। কেউ যে দারুলের সামনে মন খারাপ করে থাকবে এমনটা হওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না। সেখানে আভা তার সবচেয়ে ভাল বন্ধু ছিল সে কোনো বিষয় নিয়ে মন খারাপ করে থাকবে এটা দারুল একদম নিতে পারতো না। সেই কলেজের ব্যবহারটাই দারুল, আভাকে দিতে শুরু করলো। ফলে আভার মাহিরের জন্য মন খারাপ করে থাকার কোনো সুযোগই ছিল না। এভাবে আভা আর দারুলের নতুন এই বন্ধুত্বের বয়স প্রায় ১ বছর হয়ে গেলো। সবকিছু ভালই চলছিলো।

আভা আগাগোড়া দারুলকে খুব বিশ্বাস করতো। হঠাৎ এমন একটা ঘটনা ঘটলো যা আভার মনে একটা প্রশ্ন জাগালো। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। আভার শিফট আগে আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিলো। সে চেয়েছিলো প্রায়ই দারুল আর সে কফি খেতো সেখানে দারুল আসার আগে গিয়ে দারুলের জন্য অপেক্ষা করে দারুলকে চমকে দেবে। আভা যা ভেবেছিলো তেমনটা হয়নি। আভা সেখানে পৌঁছে দেখলো দারুল সেখানে আগে থেকেই একটা মহিলার সাথে কথা বলছে। আর এটা রেস্টুরেন্টে ঢোকার গেটে দাঁড়িয় দেখেই কেন যেন আভার মনটা ভেংগে গেল। তারা দুইজন খুব হাসাহাসি করে কথা বলছে। আভা দুর থেকেই ভাবতে লাগলো, এটা কি দারুলের গার্লফ্রেন্ড? তার কি তাদের কাছে যাওয়া উচিত? যদি গার্লফ্রেন্ডই হয় তাহলে দারুল তাকে আগে থেকেই এটা কেন বলেনি? তার কি ঐ অবস্থায়ই ওখান থেকে না দেখার ভান করে চলে যাওয়া উচিত? আসলে, আভা বুঝতেই পারছিলো না তার কি করা উচিত। এসব ভাবতে ভাবতেই কেন যেন আভার শরীর ছেড়ে দিচ্ছিলো। আভা ঐ অবস্থাতেই ওখান থেকে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো এবং চলেও গেলো।

ঐ রাতে এসব চিন্তা করতে করতে আভা একটুও ঘুমাতে পারলো না। পরের সকাল না ঘুমানোর ফলে তার অবস্থা বিধ্বস্ত প্রায়। সে সিদ্ধান্ত নিলো সে এসব নিয়ে আর ভাববে না। কারণ সে যেসব জিনিস নিয়ে ভাবছে তার ধারণা ভুলও হতে পারে। ঐদিনটা আভার অফ ডে ছিল। ঐদিন বিকেলে দারুল তাকে ফোন দিলো। তার গলার স্বরে সে খুব উৎফুল্ল বোঝাই যাচ্ছিলো। দারুল উৎফুল্ল স্বরেই আভাকে বললো, ‘আভা আজ তোমার অফ ডে বলেছিলে না? চলো কোথাও ঘুরতে যাই।' আভার যদিও যা দেখেছে আগের দিন তাতে সংশয় ছিলো। তবুও আভা ভাবলো তার দেখা করা উচিত এবং যদি এই বিষয়টা নিয়ে কথা ওঠে তাহলে এসব নিয়ে কথা বলে সংশয় দুর করা উচিত। কথামত, আভা দারুলের সাথে ঐ রেস্টুরেন্টেই গেলো। সর্বদা দারুল যে ব্যবহার দেয় তাই দিচ্ছিলো। কিন্তু আভা কোনো কথায় মনোনিবেশ করতে পারছিলো না। তার মাথায় শুধু গত দিন যা দেখেছে তাইই ঘুরছিলো। এসবের মধ্যেই হঠাৎ আভা কাপা কাপা স্বরে দারুলকে বললো, ‘দারুল আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে চাই।' দারুল বললো, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই। কিন্তু তোমার মুখটা এমন দেখাচ্ছে কেন? কোনো সমস্যা?’ আভা বললো, ‘আমি কালকেও এখানে এসেছিলাম। তোমাকে একজন মহিলার সাথে খুব হাসাহাসি করে কথা বলতে দেখলাম। ভাবলাম তোমার গার্লফ্রেন্ড। তাই তোমাদের কাছে আসিনি।' দারুল অবাক হয়েই বললো, ‘আমাকে দেখেছিলে!’ আভা বললো, ‘হ্যাঁ এবং আমার কি করা উচিত বুঝতে না পেরে আমি চলে গিয়েছিলাম।' দারুল এটা শুনে চুপ করে গেল। আর তাতে আভার মনটা ভেঙ্গে যেতে শুরু করলো আগে মাহিরের ক্ষেত্রে যেভাবে ভেঙ্গে গিয়েছিলো। আবার দারুলের কাছ থেকেও তার এমন কিছু শুনতে হবে। আর এই ভয়টা আভার ভিতরটা কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছিলো। দারুল হঠাৎ জোরে হেসে উঠে বললো, ‘আরে ও তো আমার খালাতো বোন। ওর নাম ইভা। ও নতুন একটা চাকরী পেয়ে এখানে এসেছে। আর এ শহরে আমি ছাড়া ওর আপন বলে এই শহরে কেউ নেই। আম্মা বলে দিয়েছিলো ওর সাথে দেখা করতে। তাই ওর সাথে দেখা করে ওর কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না খোঁজ নিলাম। ঘুরলাম। ঘুরে শহরটা দেখালাম। যাতে ও স্বাভাবিক হতে পারে।' আভা কেমন যেন হাফ ছেড়ে বাচলো আর একটু রেগেই বলে উঠলো, ‘তাহলে তুমি জিজ্ঞেস করার সাথে সাথেই উত্তর দিলে না কেন? আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম। চুপ করে ছিলে কেন?’ দারুল এবার আরো জোরে হেসে বললো, ‘তুমি আমাকে চেনো না? আমাকে তো তুমি কলেজ জীবন থেকেই দেখছো। আমি জাস্ট তোমার সাথে মজা করছিলাম।' আভা এবার হেসে বলে উঠলো, ‘পুরো বিব্রত করে দিয়েছিলে। আমি তোমাদের একসাথে এভাবে সময় কাটাতে দেখে কত কিছু ভেবে বসেছিলাম।' দারুল এবার আভার হাতটা ধরে বললো, ‘আভা, আমি আজ তোমাকে একটা কথা বলি? আমি জানি আমার নিরবতা তোমাকে বিব্রত না। ভয় পাইয়ে দিয়েছিলো। কিন্তু তোমার ভয়ের কোনো কারণ নেই। সেই কলেজ জীবন থেকেই তুমি ছাড়া আমার জীবনে আর কেউই নাই।' এটা শুনে আভার ভিতরে একটা সমধুর বাতাস বয়ে গেলো। আর সে ভাবতে থাকলো কোনো কিছু পুরোটা না জেনেই সে কত কিছু ভাবতে থাকে জীবনের সব ধরণের ঘটনাতেই। সে বুঝলো দারুল আসলেই মাহিরের মত নয়। দারুলকে বিশ্বাস করা যায়।

একদিন আভা রাতে একসাথে খাবে বলে সিদ্ধান্ত নিলো। তারা গতানুগতিক তাদের সবসময় যে রেস্টুরেন্টটায় যায় সেখানেই খেতে গেল। খেতে খেতে দারুল মজার ছলেই হঠাৎ আভাকে জিজ্ঞেস করলো, ‘তা তোমার আমার আগে কয়জনের সাথে রিলেশন ছিল, সেসব কিছু বলো।' প্রথমে আভা একটু ইতস্তত করছিলো দারুলকে মাহিরের কথা বলবে কি না এটা ভেবে। পরে সে সবকিছুই দারুলকে খুলে বললো। দারুল খুব মন দিয়ে আমার ঘটনাটা শুনলো। এবার সে আবার আমার হাতটা ধরে বললো, ‘খুব ভাল হয়েছে তুমি এটা আর চেপে রাখোনি। আমি জানি এই ঘটনাটা নিজের ভিতরে চেপে রাখাটা কতটা কষ্টের। তুমি ভেবো না। আমি আছি তো তোমার সাথে সারাজীবন।' এটা শুনে আভার ভিতরে একটা প্রশান্তির হাওয়া বয়ে গেলো। ঠিক ঐ মুহুর্তে আভা এটাও বুঝে গেলো জীবনে চলার জন্য সে একজন মানুষ পেয়েছে তার পাশে। সে বুঝতে পারলো মাহিরের মত মানুষকে প্রকৃতি তার জীবন থেকে সরিয়ে দিয়েছে তার ভালর জন্যই। তারা ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো।

আভা কখনো ভাবেনি যে তার জীবনে মাহিরের সাথে এতকিছু হওয়ার পরও সে দারুলের মত একটা মানুষ পাবে যে তাকে সত্যিকারের ভালবাসবে। তার খেয়াল রাখবে। তার জীবনে আরেকটা অধ্যায়ের শুরু হবে যার নাম দারুল। জীবন সবসময় আমাদের সারপ্রাইজ দেয়। কখনো কখনো আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত খারাপ ঘটনাই আমাদের ভালর দিকে নিয়ে যায়।




বইটি কিনতে চাইলে এই এই লিংকে ক্লিক করুন


\



ফ্রিল্যান্স কনটেন্ট রাইটার প্রয়োজন হলে এই ফেসবুক প্রোফাইলের লিংকে যোগাযোগ করুন।


প্রোডাক্টের নামঃ- Nokia 103 Single Sim (Refurbished)
প্রোডাক্টের বিবরণঃ- এই মোবাইলটি রিফারবিশড এবং অরিজিনাল মোবাইল।
এটি ফুল বক্সড করা থাকবে সাথে সব কিছু পাবেন।(চার্জার+ব্যটারি)
হেডফোন থাকবে না।
রাফ ইউজ এর জন্য মোবাইলটা অনেক ভালো হবে শক্ত পোক্ত মোবাইল।
চিকন পিনের কেবল দিয়ে চার্জ দেওয়া যায়।
এক সিম ও এইচডি কল সাপোর্টেড।
দুই থেকে তিন দিন এর মতো চার্জ ব্যাকাপ থাকে।
কালো কালারের মোবাইল আছে। হালকা/ছোট মোবাইল এটা।
নোকিয়া ১০৩ রিফার্বিশড কন্ডিশন মোবাইল।
নোকিয়া ১০৩ মোবাইলটি ১০০% অরিজিনাল।
Nokia 103 Made in Finland অথবা Made by Nokia হবে, ১০০% অরিজিনাল।
প্রোডাক্টের মূল্য;- ১২১৩ টাকা (ঢাকার ভিতরে) ১২৬৮ টাকা (ঢাকার বাইরে) [ডেলিভারি চার্জ সহ]
ক্যাশ অন ডেলিভারি
মোবাইলটি কিনতে চাই এই ফেসবুক পেজের লিংকে ক্লিক করুন

কেন মানুষ প্রতারণা করে?

  

আমার নাম আভা। আমার বয়স ৩৩ বছর। আমি একটা হাসপাতালে নার্স হিসেবে চাকরি করি। প্রতিদিন আমাকে রোগীদের সেবায় দিনের একটা লম্বা সময় কাটাতে হয়। দিনের ডিউটিতো থাকেই কখনো কখনো রাতেও ডিউটি করতে হয়। এতকিছুর পরেও আমার এই কাজটা ভাল লাগে। কারণ এখানে মানুষের সেবা প্রত্যক্ষভাবে করা যায়। গত বছর পর্যন্তও আমার রিলেশনশীপ স্ট্যাটাস সিংগেল ছিল। তাই কাজ বাদে আমার কাউকে যেহেতু সময় দেওয়ার ছিল না। তাই সারাদিন ইচ্ছেকৃত কাজকেই বেশি সময় দিতাম। এমনকি ওভার টাইমও করতাম। যাতে সময় কাটে। ফলে যেটা হোতো তা হচ্ছে, প্রচন্ড ক্লান্ত বোধ হোতো কাজ শেষে। ছুটি পেলেই আমি আমার মায়ের সাথে দেখা করতে যেতাম। আমার মা গ্রামে থাকে। আমার জীবনটা খুব সহজ ও স্বাভাবিক ছিল।

একদিন একটা পরিবর্তন আসলো। আমাদের হাসপাতালে নতুন এক ডাক্তারের পোস্টিং হোলো। ডাক্তারের নাম ছিল মাহির। সে আমার থেকে দুই বছরের ছোট ছিল জানতে পারলাম। তবে সে খুব সুদর্শন ছিল। তার ব্যবহার অমায়িক ছিল এবং সর্বদা হাস্যোজ্জ্বল মুখ। ফলে সব ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালের কর্মচারীরা তাকে অনেক পছন্দ করতো। আমাদের হাসপাতালে এত্ত সুন্দরী সুন্দরী নার্স আছে যে তাদের মধ্য থেকে মাহির আমাকে খেয়াল করবে এটা আমি ভাবিওনি কখনো। আমি আর ১০টা সাধারণ মেয়ে যেভাবে চলাফেরা করে ও পোশাক পরে আমিও ঠিক তেমনি ছিলাম। কিন্তু মাহির আমার সাথে ধীরে ধীরে কথা বলতে শুরু করলো। প্রতিদিনই সে আমার সাথে দেখা হলে হাসিমুখে ভাল মন্দ জিজ্ঞেস করতো। মাহিরের একটা বাইক ছিল। সে প্রতিদিন সেটাতেই করে হসপিটালে আসা যাওয়া করতো।

একদিন আমাদের ডিউটি একসাথেই শেষ হলো। আমি আমাদের হসপিটালের ঠিক উল্টোপাশে যে যাত্রী ছাউনিটা ছিল সেখানে দাঁড়িয়ে বাসের অপেক্ষা করছিলাম। ঠিক তখনি মাহির আমার সামনে তার বাইকটা নিয়ে দাঁড়িয়ে আমাকে বললো আপনি চাইলে আমি আপনাকে বাড়ি পৌছে দিতে পারি। আমিও আপত্তি করলাম না। আমি তার বাইকে উঠলাম। চলার পথে আমাদের বেশ কথাও হোলো। নিজেদের কাজ, পরিবার এসব নিয়েই পুরো পথ আমাদের কথা হোতে থাকলো। আমার কেন জানি মাহিরের সাথে কথা বলতে বেশি জড়তা লাগেনি। এরপর থেকে প্রায়ই আমি মাহিরের সাথে যাতায়াত করতে লাগলাম। আমরা কখনো কখনো চলার পথে কোনো কফি শপে দাঁড়িয়ে কফি খেতে খেতেও গল্প করতাম। এভাবে আমি ধীরে ধীরে পছন্দ করতে শুরু করলাম। আমি তার সাথে রোজ যাতায়াতের জন্য আর দেখা করার জন্য রোজ অপেক্ষা করে থাকতাম।

হঠাৎ একদিন মাহির বলে বসলো, ‘আমার তো আগামীকাল অফ ডে। তোমার কি ডে অফ আছে আগামীকাল?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ, কেন?’ মাহির বললো, ‘আগামীকাল আমরা সারাটা দিন একসাথে কাটাতাম। ঘুরব, খাব, মুভি দেখব। এইসব আর কি।' আমি মনে মনে অনেক খুশি হলাম এবং রাজি হয়ে গেলাম।

পরেরদিন কথা মত আমরা পুরোটা দিন একসাথে কাটালাম। খুব সুন্দর একটা দিন কাটালাম। রাত ৯টার দিকে মাহির আমাকে আমার বাসার সামনে নামিয়ে দিলো। আমার কয়েকজন নার্স কলিগ মিলে আমরা একটা ফ্লাট নিয়ে থাকি। আমি আমার রুমে ঢুকে ভাবলাম মাহিরও বোধহয় আমাকে পছন্দ করতে শুরু করেছে।

এর কিছুদিন পর মাহির আমাকে একটা কথা বললো। যা শুনে আমি রীতিমত আকাশ থেকে পড়লাম। মাহির আমাকে বললো, সে বিবাহিত। আমি অবাক হয়ে ভাবলাম সে আমাকে একবারও বলার প্রয়োজন বোধ করেনি যে সে বিবাহিত। বিবাহিত মানুষের কিছু না হোক একটা আংটি অন্তত থাকে সচরাচর। তার হাতে তাও ছিল না। সহজ করে বলতে গেলে সে বিবাহিত এটা বোঝার কোনো উপায়ই ছিল না। সে আরও বললো, তার বিয়ে হয়েছে ৫ বছর হোলো। তার ওয়াইফের নাম লিজা। তাদের কোনো সন্তান নেই। এমনকি তাদের দাম্পত্য জীবনেও কোনো সুখ নেই। তাদের মন বা পছন্দের কোনো মিল না থাকায় তারা একসাথে বা অন্তরঙ্গ কোনো সময়ই কাটায় না। সে আমাকে খুব পছন্দ করে। তার আমার সাথে সময় কাটাতেই বেশি পছন্দ। ঠিক ঐ মুহুর্তে আমার ঠিক কি করা উচিত বুঝতে পারছিলাম না। আমি এর মধ্যে মাহিরকে ভালবেসে ফেলেছি। কিন্তু আমি তার জীবনে কোনো সমস্যা করতে চাই না। আমি শুধু বললাম, ‘আচ্ছা, আমাকে একটু ভাবতে দাও।'

আমি বাসায় এসে শুধু ভাবতে থাকলাম একটা বিবাহিত মানুষ কিভাবে আমার সাথে স্বম্পর্ক করতে চাইতে পারে? এরপর থেকে আমি ভাবতেই থাকলাম এটা ওটা নিয়ে। আমি দ্বিধায় পড়ে গেলাম এটা নিয়ে যে আমার আসলে কি করা উচিত, অন্তত তার সাথে কথা বলা চালিয়ে যাওয়া উচিত নাকি সেটাও বন্ধ করে তাকে এড়িয়ে চলা উচিত? আমার মস্তিষ্ক বলছিলো তাকে এড়িয়ে চলা উচিত। আবার মন বলছিলো আমার জীবনে আমি প্রথম কারো প্রেমে পড়েছি তাকে ছাড়া আমার চলবে কি করে? এর মধ্যে বলে রাখা ভাল, যেদিন মাহির আমাকে এই ঘটনাটা বলেছিল, তার পরের দিনটা আমি ডিউটি করেছিলাম। ডিউটি করে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলাম। যেদিন ডিউটি করেছিলাম ঐ দিনটা আমি মাহিরকে প্রায় এড়িয়েই ছিলাম। মাহিরও আমাকে দেখলেও কিছু বলেনি। শুধু তাকিয়ে থাকতো।

যাই হোক, এই ছুটি নেওয়ার শেষের দিন আমি একটা শপিং মলে কিছু শপিং করতে। ভেবেছিলাম, শপিং করলে হয়তো একটু ভাল লাগবে। শপিং মলে যখন শপিং-এর জন্য ঘুরে ঘুরে দেখছি, হঠাৎ একটা পরিচিত স্বর ভেসে আসলো। আমি ফার্স্ট ফ্লোর থেকে তাকিয়ে দেখলাম গ্রাউন্ড ফ্লোরে মাহির একটা মহিলার সাথে কথা বলছে। আমি ধারণা করলাম, এটাই মাহিরের ওয়াইফ লিজা। লিজাকে দেখতে অসম্ভব সুন্দর। অনেক দামী একটা শাড়ি পড়ে আছে। পুরো একটা মডেলের মতই লাগছে। সে আর মাহির খুব হেসে হেসেই কথা বলছে। তাদেরকে দেখে অনেক সুখি মনে হোলো। এটা দেখে আমার খুব কষ্ট হোলো। কষ্ট হয়েছিলো এজন্য না যে তাদের সুখি মনে হচ্ছিলো, বরং কষ্ট হয়েছিলো এটা ভেবে যে মাহির আমাকে এত বড় মিথ্যা বলেছিলো যে সে সুখি নয়। আমি আর এক মুহুর্তে সেখানে অপেক্ষা করতে পারিনি। আমি শপিংমল থেকে বেরিয়ে আসলাম এবং সোজা আমার বাসায় চলে আসলাম। হ্যাঁ, এটাও সত্য আমি মাহিরকে এতটাই ভালবেসে ফেলেছিলাম যে তার সাথে অন্য কোনো মহিলা বা মেয়েকে দেখলে আমার জেলাস ফিল হোতো। আমার আসলেই কি করা উচিত বুঝতে পারছিলাম না। এত আবোল তাবোল চিন্তা মাথায় আসছিলো ঐ রাত আমার ঘুমই হোলো না।

পরের দিন, আমি হসপিটালে গেলাম। আমার ছুটিও শেষ। ঘুম হয়নি বলে খুব ক্লান্ত লাগছিলো। আমার এতসবের পর মাহিরের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো না। কিন্তু কিছু করার ছিল না একসাথে ডিউটি করতে গেলে কথা তো বলতেই হবে। সে আমাকে দেখে হাসিমুখে কেমন আছো জিজ্ঞেস করলো। কিন্তু আমার জবাব দিতে ইচ্ছে হোলো না। এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে থাকলো। আমি আর পারছিলাম না। অবশেষে, আমি আমার সবচেয়ে কাছের কলিগ সাজিয়াকে সব খুলে বললাম। আমি জানতাম না সাজিয়া আমাকে মাহিরের সাথে মেলামেশা নিয়ে খেয়াল করছে। সাজিয়া বললো, ‘আভা, তুই যখন থেকে মাহিরের সাথে ঘনিষ্ঠ হচ্ছিস বুঝলাম। আমি মাহির স্বম্পর্কে খোঁজ নিতে শুরু করলাম। মাহির যা বলেছে তা মিথ্যা তার দাম্পত্যে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তার মেয়েদের প্রতি আকৃষ্টতা বা মাখামাখি করার প্রবণতা বেশি। আগে যেখানে ছিলো সেখান থেকেও মেয়েলি কারণে তার ট্রান্সফার হয়। কিন্তু আমি কিভাবে তোকে বলব, তুই বিশ্বাস করবি কি না আমি বুঝতে পারছিলাম না।' এটা জানার পর আমার মাহিরের প্রতি আর কোনো আগ্রহ যে থাকবে না এটা নিশ্চয়ই আর বলা লাগবে না? কিন্তু আমি আর ওকে দেখতেও চাচ্ছিলাম না। আমি কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করে ঐ হসপিটাল থেকে ট্রান্সফার নিলাম। আর শিখলাম, জীবন আমাদের অনেক সুযোগ দেয় এবং ভবিষ্যতেও দেবে। আমাদের ওগুলো থেকে যেটা আমদের জন্য সবচেয়ে ভালো সেটা বেছে নিতে হবে।



ঢাকায় হোটেল খুঁজছেন? এই লিংকে ক্লিক করে এই হোটেলটি বুক করতে পারেন।


'দর্শণের সমস্যাবলী' গ্রন্থটি রাসেলের চিন্তা ভাবনার বহিঃপ্রকাশ এবং দর্শণের মৌলিক সমস্যাগুলির ওপর একটি বিস্তৃত আলোচনার প্রতিনিধিত্ব করে, যা আজও দার্শণিকদের এবং সাধারণ পাঠকদের জন্য অগ্রগতির উৎস হিসেবে কাজ করে।

এই বইটি কিনতে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন


একটি গতানুগতিক সাবলীল প্রেমের গল্প

 

একটা ছোট গ্রামে একটা সুন্দরী মেয়ে ছিল। তার নাম ছিল ইলা। তার বয়স ছিল ২০ বছর। তারা গরীব ছিল কিন্তু তারা সুখী ছিল। তারা একটা কুঁড়ে ঘরে বাস করতো এবং তারা পরিবারের একে অপরকে খুব ভালবাসতো। তার বাবা অনেক কষ্টে তাকে একটা ডিগ্রী কলেজে ভর্তি করে দেয়। সে ডিগ্রী ১ম বর্ষের ছাত্রী ছিল। সে গল্পের বই পড়তে খুব ভালবাসতো। সে সব সময় একটা সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতো। একদিন সে তাদের গ্রামের হাটে বাজার করতে গিয়েছিলো। সেখানে তার জয় নামের একজন সুদর্শন যুবকের সাথে দেখা হয়। জয় গ্রামের এক বড়লোকের ছেলে ছিল। তার বাবা বলা যায় গ্রামের একজন জমিদারই ছিলেন। বাজার করতে করতে ও কথা বলতে বলতে তাদের পরিচয় হয়। এরপর তাদের সাথে নিয়মিত দেখা হতে থাকে। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাদের সাথে কখনো কোনো খোলা মাঠে আবার কখনো কোনো নদীর ধারে দেখা হতে থাকে। একে অপরের সাথে অনেক ধরণের গল্প হয়, অনেক হাসি, ঠাট্টা হতে থাকে। জয় তার স্বপ্নের কথাগুলো ইলাকে আবার ইলা তার ভবিষ্যত নিয়ে কল্পনা জয়কে বলে। এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব দিনের পর দিন এগোতে থাকে। এরপর একদিন জয় তার মনের অভিব্যাক্তি ইলাকে বলে। সে বলে, ‘ইলা, তোমার আপত্তি না থাকলে আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই'। এতদিনে ইলাও জয়ের প্রতি মানসিকভাবে এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে ইলা এক বাক্যে এই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। তারা একসাথে তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। কিন্তু, সমস্যাটা হলো জয়ের পরিবার ইলাকে পছন্দ করেনি। এর কারণ মূলত, ইলা একটা গরিব পরিবারের মেয়ে। জয়ের বাবা মা সরাসরিই তাকে বলে, ‘দেখো, এই বিয়ে সম্ভব না। কারণ ইলার পরিবারের অবস্থা আমাদের সমকক্ষ না।' প্রতি উত্তরে জয় বলে, ‘দেখো, আমি ইলাকে অসম্ভব ভালবাসি এবং সে অনেক ভাল মেয়ে। তার মন অনেক ভাল এটাই কি যথেষ্ট না? জীবনে অর্থই কি সব?’ জয়ের বাবা মা তার কোনো কথা শোনেনি। তারা সরাসরি জয়কে বলে দেয়, ‘দেখো, তুমি যদি ইলাকে বিয়ে করো। তবে তোমাকে এই বাড়ি ছাড়তে হবে।' ইলা যখন এই বিষয়টা জানতে পারে তখন সে অনেক কষ্ট পায়। সেও জয়কে অসম্ভব ভালবাসতো, তাকে হারাতেও চাইতো না। তবে তার কারণে জয়ের জীবনে কোনো সমস্যা হোক এটাও সে চাইতো না। সে জয়কে তাই বলেই বসলো, ‘দেখো, আমাদের বিয়ে না করাটাই হয়তো ভাল। আমি চাই না আমার কারণে তোমার জীবনে কোনো সমস্যা হোক।' জয় বলে, ‘ইলা, আমিও যেহেতু তোমাকে অসম্ভব ভালবাসি। তাই আমার পক্ষে তোমাকে ছেড়ে থাকা সম্ভব না। চিন্তা কোরো না, কিছু একটা উপায় নিশ্চয়ই হবে।'

এভাবে দিনের পর দিন চলে যায়। জয় নিয়মিত তার বাবা মা কে রাজি করানোর চেষ্টা করে। কিন্তু, কিছুতেই তাদের রাজি করাতে পারে না। ইলার বাবা মাও জিনিসটা জানতে পারে। জেনে তারাও উদ্বিগ্ন হতে থাকে। ইলার মা তাকে বলে, ‘আমরাও তোকে অনেক ভালবাসি। আমরাও চাই তুই জীবনে সুখি হ। তবে আমাদের মনে হয় জয়ের পক্ষে তার বাবা মাকে রাজি করানো সম্ভব না। তাই তোর জয়কে ভুলে যাওয়াই মনে হয় ভালো।' ইলার এমন একটা রাত যায়নি যেখানে তার এসব ভেবে না কেঁদে গেছে। কিন্তু সে জয়কে এতটাই ভালবাসে যে জয় আঘাত পাবে মায়ের কথা মানতেও পারছিলো না। অবশেষে, ইলা একদিন জয়ের সাথে দেখা করতে চাইলো। দেখা করে সে মনকে শক্ত করে জয়কে বললো, ‘জয়, আমি তোমাকে অসম্ভব ভালবাসি। কিন্তু আমার মনে হয় আমাদের বিয়ে করে একসাথে সংসার করা হবে না। তোমার বাবা মা আমাকে কখনই গ্রহন করবেন না। আর আমি চাই না আমার কারণে তোমার জীবনটা আর কঠিন হোক।' এটা শুনে জয়ের হৃদয়টা ভেঙ্গে যায় ঠিকই কিন্তু সে বলে, ‘আমি তোমাকে অসম্ভব ভালবাসি এটা তুমি জানো। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি। আমি দুরে থাকলেও আজীবন তোমাকে ভালবাসব।' তারা আসলে এরই মধ্যে বুঝে গিয়েছিলো তাদের দুইজনের একে অপরের প্রতি ভালবাসা দৃঢ় হলেও এ নির্মম পৃথিবী তাদের এই ভালবাসাকে স্বীকৃতি দিতে চায় না। তারা কোনোদিন এক হতে পারবে না জেনে সারাজীবন বন্ধু হয়ে একে অপরের পাশে থাকার অংগীকার করে। এরপর তারা তাদের পারিবারিক জীবনে মনোনিবেশ করে।

এভাবে বছরের পর বছর পার হয়ে যায়। কিন্তু কেউ কাউকে এতটুকুও ভুলতে পারে না। তবে তারা এর মধ্যে এটুকু বুঝে যায়, পৃথিবীতে ভালবাসাই সবকিছু না। তবে তারা নিজেরাই প্রতিজ্ঞা করে জীবনে যত কঠিন সময়ই আসুক না কেন তারা কেউ কাউকে ছেড়ে যাবে না।

একদিন, ইলার বাবা হঠাত খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। ইলা এতে খুব চিন্তিত হয়ে পড়ে। সে তার বাবার সেবা করতে থাকে এবং উপরওয়ালার কাছে তার বাবার সুস্থতা কামনা করতে থাকে। জয় এটা জানতে পারে ও ইলার পাশে থাকতে চায়। সে ইলার বাড়িতে যেয়ে ইলাকে বলে, ‘তুমি একদম চিন্তা কোরো না। আমি তোমার পাশে আছি।' ইলা বলে, ‘তুমি যে পাশে আছো এতেই আমি শক্তি পাই।' যখনি প্রয়োজন হোতো জয় খাবার, ঔষধ নিয়ে যেতো। আস্তে আস্তে ইলার বাবা সুস্থ হয়ে ওঠে। জয় যে সবসময় তাদের পাশে ছিল এতে ইলার বাবা মা খুব খুশি হয়। ইলা জয়কে বলে, ‘তুমি না থাকলে আমি একা যে কি করতাম!’ জয় বলে, ‘আমি তো বলেইছি আমি সারাজীবন তোমার পাশে আছি।' এরপর থেকে যদিও তারা জানতো যে তাদের এ স্বম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত নাই, তারপরেও তারা একে অপরের সাথে সময় কাটানো, দেখা করা বাড়িয়ে দেয়।

এরপর একদিন, জয়কে বাবার ব্যবসার কাজে কিছুদিনের জন্য শহরে যাওয়ার প্রয়োজন হয়ে বসে। সে ইলাকে সব খুলে বলে শহরে যাওয়ার ব্যাপারে। সে কথা দেয় সে যে কয়দিন শহরে থাকবে নিয়মিত ইলার সাথে যোগাযোগ রাখবে। ইলার ভেতরে ভেতরে কষ্ট হলেও সে মেনে নেয় বিষয়টা। ইলা বলে, 'আমার তোমাকে অনেক মনে পড়বে। নিজের খেয়াল রেখো।' জয় বলে, ‘আমারও তোমাকে অনেক মনে পড়বে। আমি দ্রুতই ফিরে আসব।'

জয় শহরে যাওয়ার পর ইলার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো। তারা তদের শহুরে জীবন আর গ্রাম্য জীবনে নিয়মিত ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো একে অপরকে জানাতো। এরই সাথে একে অপরের প্রতি সৃষ্ট অনুভুতিগুলোও তারা একে অপরকে জানাতে ভুলতো না।

এভাবেও, সময় কেটে যেতে লাগলো। জয় একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠলো। পরিবারের প্রতি দ্বায়িত্ব-কর্তব্যের পাশাপাশি ইলার প্রতি দ্বায়িত্ব-কর্তব্যও সে পালন করে গেলো। ইলা তাকে হয়তো পাশে পাইনি। তবে জয়ের সাফল্যে সে খুব খুশি হোলো।

একদিন জয় গ্রামে ফিরলো। গাড়ি থেকে নেমেই সে ছুটে গেলো ইলার বাড়ি। ইলার বাড়ি এসে ইলাকে ডাক দিতেই ইলা ঘর থেকে বেরিয়ে খুশিতে থমকে গেলো। তার ভিতরের আনন্দ তার মুখে প্রতিফলিত হচ্ছিলো। তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে নদীর পারে বসে কথা বলছিলো। কথার একটা পর্যায়ে, জয় ইলাকে এবার সোজাসাপ্টা বলে বসলো, ‘আমার তোমাকে ছাড়া আর একটা মুহুর্তও থাকা সম্ভব না। আমি এবার তোমাকে বিয়ে করতে চাই।' কিন্তু এতে ইলার মুখে চিন্তার ছাপ দেখা গেল। সে জয়কে বললো, ‘তোমার বাবা মা আমাকে কখনোই মেনে নেবে না।' জয় বললো, ‘আমি এতদিন ব্যবসা করে টাকা সঞ্চয় করেছি। যদি বাড়ি থেকে মেনে না নেয়। তবে আমরা দুজনে দুরে কোথাও গিয়ে সংসার করব।' ইলা বললো, ‘এটা হয় না, জয়। আমার কারণে তুমি তোমার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এটা আমি কখনোই মেনে নিতে পারব না।' জয় বলে, ‘আর আমি তোমাকে ছাড়া যে কষ্টে থাকব। সেটার কি হবে?’ ইলা সব শুনে আর জয়কে এড়াতে পারেনি। ইলা ও জয় এরপর ইলার বাবা মাকে সব বুঝিয়ে বলে। প্রথমে তাদের আপত্তি থাকে। ইলা আর জয়ের সিদ্ধান্ত যে চূড়ান্ত হয়ে গেছে এটা বুঝে তারা আর আপত্তি করেনি। জয় আর ইলা তাদের কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে কোর্টে বিয়েটা সেরে ফেলে। বিয়ের পর ইলাকে জয় বাড়ি নিয়ে গেলে কাংখিত ঘটনাই ঘটলো। জয়ের বাবা মা জয় ও ইলাকে মেনে নিলো না। ঐ অবস্থায়ই জয় ইলাকে নিয়ে শহরে চলে এলো। জয় আর ইলা জয়ের সঞ্চিত অর্থ দিয়েই ছোট একটা ব্যবসা শুরু করলো। তাদের দুইজনের ভালবাসার প্রতি এতটাই আস্থা ছিলো যে, তারা জানতো যে যত প্রতিকুল পরিবেশই আসুক না কেন তারা পারবে।

এরপর বছর অতিবাহিত হয়ে গেলো। তাদের পরিবারের সদস্য বাড়লো। এতকিছুর মধ্যেও তারা তাদের খারাপ সময় ভুলে গেলো না। তারা বুঝতে পেরেছিলো, ভালবাসা ও শ্রদ্ধা অটুট থাকলে যেকোনো প্রতিকুল পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়। এভাবে সময় অতিবাহিত হতে হতে যখন তারা বৃদ্ধ হয়ে গেলো তারা তাদের নাতিপুতিকে নিজেদের ভালবাসার গল্প বলে ভালবাসা ও বিশ্বাসের গুরুত্ব শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো।



প্রোডাক্টের নামঃ- লেডিস উইন্টার জিন্স জ্যাকেট

প্রোডাক্টের মূল্যঃ- ৮৬০ টাকা (ঢাকার ভিতরে) ৯৩০ টাকা (ঢাকার বাইরে) ডেলিভারি চার্জ সহ

ক্যাশ অন ডেলিভারি।

যোগাযোগঃ- ফেসবুক পেজ লিংক




বইটি কিনতে চাইলে এই লিংকে ক্লিক করুন

আমি ভেবেছিলাম সে আমাকে ভালবাসে

  আমার নাম সাদিকা। আমি আমার গল্পটা সবাইকে বলতে চাই। এটা মূলত একটা ভালবাসা , ভুল আর আশার গল্প। আমি খুব শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। আমি বেশি কথা বলি...